এবার পাবনার বেড়ায় অপহরণের এক মাস ২৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এসএসসি পরীক্ষার্থী রূপন্তী সাহাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অপহরণের এতদিন পরও মেয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে শোকে স্তব্ধ পরিবার। মেয়েকে উদ্ধারে থানা পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন সহযোগিতা পাচ্ছেন না। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অপহৃত স্কুলছাত্রী উদ্ধার হয়নি।
এর আগে গত মার্চ মাসের ২৫ তারিখে অপহৃত শিক্ষার্থীর বাবা উত্তম কুমার সাহা বাদী হয়ে আমিনপুর থানায় অপহরণ মামলা করেছেন। অপহৃত রূপন্তী সাহা (১৬) উপজেলার আমিনপুরে পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের হরিনাথপুর এসএসডি মডেল হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা দিয়েছে। ফলাফলে জিপিএ -৪.৮৯ অর্জন করেছে।
এদিকে মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরের পুরান ভারেঙ্গার হরিনাথপুর গ্রামের উত্তম কুমার সাহার মেয়ে রূপন্তী সাহা হরিনাথপুর এসএসডি মডেল হাইস্কুল থেকে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
স্কুলে পড়াশুনা অবস্থায় জাতসাখিনী ইউনিয়নের নন্দিয়ারা (বড়বাড়ি) গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. আবির নামের একটি ছেলে রূপন্তীকে বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে আসছিল। তার প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছিল।
এদিকে মেয়েটি এই বিষয়টি তার বাবা উত্তম কুমার সাহাকে জানায়। এরপর আবিরের বাসায় গিয়ে বিষয়টি বোঝানো হলে সে তার মেয়েকে অপহরণের হুমকি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত মাসের (২৪ মার্চ) রাত ১ টার দিকে ঘর থেকে বাইরে বের হলে রূপন্তীকে আবিরসহ ৭/৮ জন মিলে জোর করে মাইক্রোবাসযোগে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এরপর অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান পাওয়া না গেলে থানা পুলিশের দ্বারস্থ হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমিনপুর থানায় আবিরসহ ৫ জনের নামে অপহরণ মামলা করা হয়েছে।
এদিকে মেয়ের মা ফাল্গুনী সাহা বলেন, মেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করলেও বিষাদে দিন কাটছে আমাদের। আসলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। ছেলের মা ও বাবা এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। পুলিশ আমাদের কোন সহযোগিতা করছে না। আমার মেয়েকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাই।
অপহৃত শিক্ষার্থীর বাবা উত্তম কুমার সাহা বলেন, দীর্ঘ এক মাস ২৩ দিন অতিবাহিত হলেও মেয়েকে ফিরে পাওয়া যায়নি।। থানায় মামলা করলেও মেয়েকে উদ্ধার করা তো দূরের কথা একজন আসামিকেও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তারা আসামিদের পক্ষে কাজ করছে। শুধু আশ্বাস দিয়েই দায় সেরে যাচ্ছে। আমি মেয়েকে উদ্ধারে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমার মেয়ে জীবিত আছে, না মেরে ফেলছে তার কিছুই জানি না। মামলার তদন্তেরও কোন অগ্রগতি নেই।
এ বিষয়ে আমিনপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশীদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় অপহরণ মামলা করা হয়েছে। অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে আমাদের অভিযান চলছে। আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয় সম্পর্কে পরে জানাতে পারব।